বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিবিসি বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে সংস্কার, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এবং রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রায় দুই দশক পর প্রথম কোনো গণমাধ্যম হিসেবে বিবিসি বাংলার মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই সাক্ষাৎকার দেন। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব আজ।
বিবিসি বাংলা: এখন বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, তাদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?
তারেক রহমান: বিষয়টি তো রাজনৈতিক। এটি তো কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়। আমরা প্রথম থেকে যে কথাটি বলছি, আমরা চাই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক। অর্থাৎ, অনেক কিছুর মতো বিভিন্ন বিষয় আছে। যেমন—আমরা যদি মূল দুটো বিষয় বলি যে, কিছু সংস্কারের বিষয় আছে, একই সাথে প্রত্যাশিত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বাধীন নির্বাচনের একটি বিষয় আছে।
মূলত কিছু সংস্কারসহ যে সংস্কারগুলো না করলেই নয়, এরকম সংস্কারসহ একটি স্বাভাবিক সুষ্ঠু, স্বাধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাই হচ্ছে বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। আমরা প্রত্যাশা করি, ওনারা উনাদের ওপরে যেটা মূল দায়িত্ব, সেটি ওনারা সঠিকভাবে সম্পাদন করবেন। এটাই তো তাঁদের কাছে আমাদের চাওয়া রাজনৈতিক দল হিসেবে।
আমরা আশা রাখি, প্রত্যাশা করি যে, ওনারা কাজটি সুন্দরভাবে করবেন। স্বাভাবিকভাবে এই কাজের সৌন্দর্য বা কতটুকু ভালো, কতটুকু ভালো বা মন্দভাবে করতে পারছেন, তার ওপরেই মনে হয় সম্পর্কের উষ্ণতা বা শীতলতা যেটাই বলেন, সেটা নির্ভর করবে।
বিবিসি বাংলা: আপনি কয়েক মাস আগে একটি মন্তব্য করেছিলেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। আপনার এই মন্তব্য নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে তাঁর একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, এ বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া কী? তিনি তখন বলেছিলেন, সন্দেহটা ওনার মনে। অর্থাৎ, আপনার মনে সন্দেহ আছে কি না, সেটা তিনি জানতে চান। আপনার মনে কি সেই সন্দেহ আছে?
তারেক রহমান: দেখুন, আমি যখন কথাটি বলেছিলাম, এই মুহূর্তে আমার যতটুকু মনে পড়ে, সেই সময় পর্যন্ত ওনারা কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে সঠিক কোনো টাইম ফ্রেম বা কোনো কিছু বলেননি।
রোডম্যাপ বলতে যা বোঝায়, আমরা নরমালি যা বুঝে থাকি, এরকম কিছু বলেননি। এবং সে কারণেই শুধু আমার মনের মধ্যেই নয়, আমরা যদি সেই সময় বিভিন্ন মিডিয়া দেখি, বিভিন্ন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব দেখি, যাঁরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা করেন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে, প্রায় সবার মনের মধ্যেই সন্দেহ ছিল।
আমরা যখন দেখলাম যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ডক্টর ইউনূস, উনি মোটামুটিভাবে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন। এবং পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকবার উনি ওনার যে সিদ্ধান্ত, সেটির ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তারপর থেকেই খুব স্বাভাবিকভাবেই এই সন্দেহ বহু মানুষের মন থেকে ধীরে ধীরে চলে যেতে ধরেছে।
আমি মনে করি, ওনারা যা বলেছেন, ওনারা যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় থাকবেন, ওনাদের বক্তব্যে, ওনাদের কাজে যত বেশি দৃঢ় থাকবেন, ততই সন্দেহ চলে যাবে আস্তে আস্তে।
বিবিসি বাংলা: সেই সন্দেহ মনে কিছুটা দূরীভূত হয়েছিল লন্ডনে যখন তিনি আপনার সঙ্গে বৈঠক করলেন। তার পরেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা এসেছিল। তো সেই বৈঠকে নির্বাচনের কথা তো হয়েছিল, যেহেতু সেটি পরে এসেছে। এর বাইরে কি আপনাদের মধ্যে আর কোনো কথা হয়েছে? আর কোনো বিষয়ে কোনো চিন্তাভাবনা বা সমঝোতা কিছু হয়েছে?
তারেক রহমান: এর বাইরে স্বাভাবিকভাবেই উনি একজন অত্যন্ত স্বনামধন্য মানুষ। অত্যন্ত বিজ্ঞ মানুষ উনি। এর বাইরে তো অবশ্যই স্বাভাবিকভাবে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে। এর বাইরেও উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন যে, জনগণ যদি আপনাদের সুযোগ দেয়, তাহলে আপনারা কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য—এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আমার কিছু চিন্তাভাবনা দেশের মানুষকে নিয়ে, দেশের জনগণকে নিয়ে, দেশকে নিয়ে আমরা যদি সুযোগ পাই, জনগণ আমাদের যদি সেই সুযোগ দেন, তাহলে আমরা কী কী বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করব, সে বিষয়গুলো নিয়ে কিছু কিছু আলোচনা হয়েছে।
আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি একাই সরকার গঠন করবে: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে তারেক রহমানআমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি একাই সরকার গঠন করবে: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে তারেক রহমান
বিবিসি বাংলা: নির্বাচনের বিষয়টি তো আপনি বললেন, এর বাইরে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে গত এক বছরে যে ভূমিকা রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার, সেটাকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
তারেক রহমান: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানে ইন্টেরিম, মানে এটা তো ক্ষণস্থায়ী বিষয়। তো খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি দেশ পরিচালনা তো একটি বিশাল বিষয়। আমরা হয়তো ভূখণ্ডের ভিত্তিতে যদি বিবেচনা করি, হয়তো বাংলাদেশকে অনেকে বলবে ছোট দেশ। কিন্তু আমরা যদি জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিবেচনা করি, বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক ভূখণ্ডের চেয়ে বড় দেশ।
ইউকের (যুক্তরাজ্য) জনসংখ্যা ৭ কোটির মতো, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্লাস-মাইনাস ২০ কোটির মতো এখন। কাজেই ইউকের তিন গুণ বড়। এরকম একটি দেশ পরিচালনা করতে হলে স্বাভাবিকভাবেই জনগণের ম্যান্ডেটসহ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন। বিভিন্ন বিষয় থাকে, ইস্যুজ থাকে, বিভিন্ন বিষয় আছে।
তো এখন নির্বাচনের বাইরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পারফরমেন্স আপনি যেটা বললেন, আমরা সবকিছু বিবেচনা করলে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, হয়তো ওনারা চেষ্টা করেছেন অনেক বিষয়ে। সব ক্ষেত্রে সবাই তো আর সফল হতে পারে না, স্বাভাবিকভাবে ওনাদের লিমিটেশনস কিছু আছে। সেই লিমিটেশনসের মধ্যে ওনারা হয়তো চেষ্টা করেছেন, যতটুকু পেরেছেন হয়তো চেষ্টা করছেন।
এক এগারোর সরকার নিয়ে মূল্যায়ন কী?
বিবিসি বাংলা: আমি একটু পিছনে তাকাতে চাই।
তারেক রহমান: ভাই, আমরা তো সামনে যেতে চাই। আপনি পেছনে কেন যাচ্ছেন? দেশকে সামনে নিতে হবে।
বিবিসি বাংলা: মানে, পেছন থেকেই তো শিক্ষা নিয়ে সামনে এগোতে হয়। তো পেছনের একটা বিষয়, সেটা হচ্ছে, এক-এগারোর সরকার বা সেনাসমর্থিত সরকারের সেই সময়টা নিয়ে রাজনীতিতে অনেক আলোচনা আছে। সে সময়টাকে ঘিরে আপনার মূল্যায়ন কী?
তারেক রহমান: এক বাক্যে বা সংক্ষেপে যদি বলতে হয়, এক-এগারোর সরকার তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি সরকার ছিল।
আমরা দেখেছি, সেই সরকার আসলে কীভাবে দেশের যতটুকু যেমনই হোক বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে যতটুকুই রাজনীতি গড়ে উঠেছিল, গণতান্ত্রিক ভিত্তি ধীরে ধীরে গড়ে উঠছিল ভুল-ত্রুটি সবকিছুর ভিতর দিয়েই। কিন্তু আমরা দেখেছি যে, কীভাবে তারা সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছিল, বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল। দেশকে একটি অন্ধকার দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দেখেছি যে, খুব সম্ভবত তাদেরই ভিন্ন আরেকটি রূপ; অন্যভাবে দেখেছি আমরা ’ইন দ্য নেম অব ডেমোক্রেসি’।
বিএনপির রাজনীতিতে পরিবর্তন হয়েছে কতটা
বিবিসি বাংলা: ২০০৪ সালে আমি আপনার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম ঢাকায়। সে সময় আপনি বলেছিলেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করবেন। তো বিএনপির রাজনীতিতে আসলে কতটা পরিবর্তন হয়েছে; ভবিষ্যৎ বিএনপিই বা কেমন হবে?
তারেক রহমান: আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণ, দেশ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব। আমরা দুটো বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে খুবই গর্ব করি, অহংকার করি। একটি হচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প, আরেকটি হচ্ছে প্রবাসীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পাঠান—এ দুটোই কিন্তু বিএনপি শুরু করেছিল।
আমরা দেখেছি, বিএনপির সময়ে শুরু হয়েছিল প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়া, একই সাথে গার্মেন্ট শিল্পের প্রসার। এর বাইরেও যদি আমরা দেখি, ১৯৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষটা হয়েছিল, পরবর্তীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলেন, আমরা দেখেছি কীভাবে ধীরে ধীরে দুর্ভিক্ষপীড়িত একটি দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসপূর্ণ করে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ না, অল্প পরিমাণ করে হলেও আমরা কিন্তু সেই সময় বিদেশে খাদ্য রপ্তানি, চাল রপ্তানি করেছিলাম।
আর রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে যদি আমরা দেখি, যেখানে একসময় সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একটি দল বাকশাল করা হয়েছিল। আমরা দেখেছি যে, বিএনপির কাঁধে যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে, তখন কীভাবে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চালু আবার করা হয়েছিল।
কাজেই আপনি বললেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ইয়েস, আমরা অতীতে এই ভালো কাজগুলো করেছি। ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ এ বিষয়গুলো কনসিডারেশন (বিবেচনায়) রেখেই সামনে এগিয়ে যাব। আমাদের অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে ভবিষ্যৎ বিএনপির গণতন্ত্রের যে বুনিয়াদ, একটি শক্তিশালী বুনিয়াদ তৈরি করা। জবাবদিহি তৈরি করা।
বিবিসি বাংলা: কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা অভিযোগ সব সময় থাকে। যখন যারা চেয়ারে বসে, জবাবদিহিতার প্রশ্নটা তখন থাকে না। মানে, এড়িয়ে যায়—এ ধরনের একটা অভিযোগ সব সময় ছিল। সব রাজনৈতিক দল বা যারাই সরকারে এসেছে।
তারেক রহমান: দেখুন, অভিযোগ থাকতেই পারে। আমি আগেই তো বলেছি, একটি বিষয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম অভিযোগ থাকতে পারে। এখন অভিযোগ নিয়ে তো আর বলা যাবে না। কিন্তু অভিযোগটা কনসিডারেশনে (বিবেচনায়) অবশ্যই রাখব। আপনি যেহেতু আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, আমি আপনাকে এটাই বলেছি। আপনি জানতে চেয়েছেন ভবিষ্যৎ কেমন হবে।
আমি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে যা দেখেছি, বুঝেছি, জেনেছি, আমি আপনার সামনে সেটিই তুলে ধরলাম। অভিযোগ এ দেশেও আছে, কিন্তু আপনি যা জানতে চাইছেন, এটি তো আমি একমাত্র সুযোগ যদি পাই, আমি ইনশআল্লাহ সুযোগ পেলে পরে তখন আস্তে আস্তে জিনিসটি প্রমাণ করা সম্ভব হবে।
হ্যাঁ, এটাও বাস্তবতা। প্রাগমেটিক কথা যেটা, বাস্তব কথা যেটা, আমি সুযোগ পেলে যে সাথে সাথেই বিষয়টি হবে তা না। কারণ, আমি সুযোগ পেলে আপনাকেও বুঝতে হবে। আপনিও কিন্তু দেশ গঠনের একটা পার্ট। কাজেই আপনার মতো এরকম লক্ষকোটি মানুষকে বিষয়টি বুঝতে হবে। এতটুকু বলতে পারি যে, ইয়েস, উই আর কমিটেড। উই উইল ট্রাই আওয়ার বেস্ট টু ডু পারফরম বেস্ট ডু দ্যাট।
বিবিসি বাংলা: জবাবদিহির কথা বলছিলেন। এ প্রসঙ্গে বলি, গত ১৫ বছর আপনি নির্বাসনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ায়, এটা একটা ভিন্ন পরিস্থিতি। নেতৃত্ব নিয়ে আপনার চিন্তাধারায় কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে? আপনি কী অনুভব করেন, অনুধাবন করেন?
তারেক রহমান: গত ১৭ বছর প্রবাসজীবনে আছি এবং অনেকগুলো বছর আমি বাংলাদেশের সাথে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা টাইম ডিফারেন্স, ডিস্টেন্স ডিফারেন্স তো আছেই। রিচিং ডিফারেন্স তো একটা ডিফিকাল্টিস তো আছেই। এটি একটি বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আমি আমার পরিবার অর্থাৎ, আমার স্ত্রী এবং আমার সন্তানকে এখানে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ তাদের সহযোগিতা না থাকলে হয়তো এই ডিফিকাল্ট কাজটি করা আমার জন্য আরও ডিফিকাল্ট হতো। ওনাদের সহযোগিতা ছিল, সে জন্য আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে।
একই সাথে আমি আবারও ধন্যবাদ দিতে চাই আমার হাজারো-লক্ষ নেতাকর্মীকে। যাঁরা এই ডিফিকাল্টিজের মধ্যে থেকেও আমাকে সহযোগিতা করেছেন দলকে সুসংগঠিত রাখতে, দলকে রাজপথে নিয়ে যেতে শত অত্যাচার, বাধাবিঘ্নের মাঝেও জনগণের কথা তুলে ধরতে, জনগণের দাবির ব্যাপারে সোচ্চার থাকতে। আপনি জিজ্ঞেস করেছেন মনে হয় যে, এখানে (যুক্তরাজ্যে) থেকে কী কী দেখেছি, শিখেছি বা জেনেছি। আমি মনে করি, এই দেশ থেকে ভালো যা কিছু দেখেছি বা শিখেছি। দেশের নাগরিক হিসেবে এবং যেহেতু আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, হয়তো আমার একটি সুযোগ আছে দেশের জন্য ভালো কিছু করার।
যদি আমি ইনশাআল্লাহ সেই সুযোগ পাই, তাহলে যতটুকু সম্ভব দেশের মানুষের জন্য বা দেশের জন্য কিছু করার, এভাবে বিষয়টিকে আমি বিবেচনা করি।
কূটনীতির ক্ষেত্রে বিএনপির মূলনীতি কী হবে?
বিবিসি বাংলা: কূটনীতির প্রসঙ্গে আসি। বিএনপি যদি সরকার গঠন করে, তাহলে কূটনীতির ক্ষেত্রে বিএনপির মূলনীতি কী হবে?
তারেক রহমান: গুড কোশ্চেন। বিএনপির মূলনীতি একটাই—সবার আগে বাংলাদেশ। কূটনীতির ক্ষেত্রে বিএনপির নীতি সবার আগে বাংলাদেশ। আমার জনগণ, আমার দেশ, আমার সার্বভৌমত্ব। এটিকে অক্ষুণ্ন রেখে, এর স্বার্থ বিবেচনা করে, এই স্বার্থকে অটুট রেখে বাকি সবকিছু।
বিবিসি বাংলা: এটাকে বৈশ্বিক রাজনীতির একটা প্রভাব বলা যায়? কারণ আপনি যদি বিভিন্ন দেশে দেখেন, এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পও আমেরিকা ফার্স্ট একটা স্লোগান দিয়ে এসেছিলেন।
তারেক রহমান: না, ওদেরটা ওরা বলেছে, আমি ভাই বাংলাদেশি। আমার কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ বড়, আমার কাছে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ বড়। কাজেই কে কী বলল…সবার আগে বাংলাদেশ, সিম্পল, কমপ্লিকেট (জটিল) করার কিছু নাই, এটা সিম্পল ব্যাপার।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অবস্থান কী?
বিবিসি বাংলা: বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে যে সম্পর্ক ছিল, সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। তো ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আপনাদের নীতি কী হবে?
তারেক রহমান: আমার মনে হয়, আপনি একটু আগে যে প্রশ্নগুলো করেছেন, সেখানে বোধহয় আমি ক্লিয়ার করেছি পুরো ব্যাপারটা। সবার আগে বাংলাদেশ। এখানে তো আপনি পার্টিকুলার (সুনির্দিষ্ট) একটি দেশের কথা বলেছেন।
এখানে ওই দেশ বা অন্য দেশ তো বিষয় না। বিষয় তো হচ্ছে, ভাই, বাংলাদেশ আমার কাছে আমার স্বার্থ, আমি আগে আমার দেশের মানুষের স্বার্থ দেখব, আমার দেশের স্বার্থ দেখব। ওটাকে আমি রেখে আপহোল্ড করে আমি যা যা করতে পারব, আমি তা-ই করব।
বিবিসি বাংলা: বাংলাদেশের স্বার্থ আপনারা সবার আগে নেবেন, সেটা আপনি পরিষ্কার করেছেন। ভারতের কথা বিশেষভাবে আসছে, যেহেতু সেটি বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ এবং বাংলাদেশের তিন পাশেই এই দেশের সীমান্ত রয়েছে। এবং এটি নিয়ে আপনিও জানেন যে, বিভিন্ন সময়ে কথা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সময় তো সম্পর্ক নিয়ে বললামই, সেটা নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত বা কেমন থাকা প্রয়োজন—এ নিয়ে আপনার চিন্তা কী?
তারেক রহমান: অবশ্যই আমি আমার পানির হিস্যা চাই। অবশ্যই আমি দেখতে চাই না যে, আরেক ফেলানী ঝুলে আছে। অবশ্যই আমরা এটা মেনে নিব না।
বিবিসি বাংলা: বাংলাদেশের স্বার্থের প্রসঙ্গে আপনি বলছেন যে, পানির হিস্যা চাওয়া এবং সীমান্ত হত্যার বিষয়টি নিয়ে আপনারা সোচ্চার থাকবেন।
তারেক রহমান: না না, আমি উদাহরণ দিয়ে বললাম। দুটো উদাহরণ দিয়ে বোঝালাম আপনাকে যে আমাদের স্ট্যান্ডটা কী হবে। আমরা আমাদের পানির হিস্যা চাই। অর্থাৎ আমার দেশের হিস্যা, মানুষের হিস্যা আমি চাই, হিসাব আমি চাই।
আমার যেটা ন্যায্য, সেটা আমি চাই। অবশ্যই ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমি বোঝাতে চেয়েছি যে, আমার মানুষের ওপরে আঘাত আসলে অবশ্যই সেই আঘাতকে এভাবে আমি মেনে নেব না।
বিবিসি বাংলা: একটা বিষয় যদি বলি, ৫ অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবং আপনিও জানেন যে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে গেছেন এবং সেখানে আছেন। ভারতের সাথে একটা সম্পর্কের শীতলতা দেখা গেছে গত এক বছর ধরে। যেমন ধরুন, সেটি যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে, ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা রকম, সেই ক্ষেত্রে কি কোনো পরিবর্তন আপনারা সরকারে এলে হবে বা পরিবর্তনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন—এমন কোনো চিন্তা কি আপনাদের আছে?
তারেক রহমান: এখন তারা যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, সেখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। এটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের সাথে শীতল থাকবে। সো, আমাকে আমার দেশের মানুষের সাথে থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ও দলীয় নেতৃত্বের প্রশ্নে যা বললেন
বিবিসি বাংলা: সংস্কারের প্রশ্নে আসি। এখন খুব আলোচিত ইস্যু। সংস্কারের কিছু বিষয়ে দেখা যাচ্ছে যে, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দলের কিছুটা মতপার্থক্য বা মতবিরোধ হচ্ছে। যেমন—এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা বা দলের প্রধান থাকতে পারবেন না, এরকম একটা প্রস্তাব এসেছে, যেখানে বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। যদি এক ব্যক্তি তিন পদে একই সাথে থাকেন, সেটা স্বৈরতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থা তৈরির সুযোগ দেয় কি না?
তারেক রহমান: সকলের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, এই যে বাংলাদেশে রাষ্ট্র মেরামতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, থাকবেন না—এরকম আরও যে বিষয়গুলো আছে, এগুলো বাংলাদেশে যখন স্বৈরাচার ছিল তাদের মুখের ওপরে, তাদের চোখের দিকে চোখ রেখে আমরা বিএনপিই বলেছিলাম।
এখন হয়তো অনেকে সংস্কারের কথা বলছেন। সেদিন কিন্তু সংস্কারের ’স’-ও তারা বলেননি। তার পরেও সকলের প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে আমি বলতে চাই যে, বিএনপি ’নোট অব ডিসেন্ট’ দিলে সেটি সমস্যা, অর্থাৎ বিএনপিকে অ্যাগ্রি (সম্মত) করতে হবে সবার সাথে, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু বিএনপি যদি কোনোটার সাথে একমত না হয়, তাহলে বেঠিক। এটি তো গণতন্ত্র হলো না।
মানে, আমাকে অন্যের সাথে একমত হতে হবে, তাহলে গণতন্ত্র। আমি যদি অন্যের সাথে দ্বিমত করি, তাহলে গণতন্ত্র না। এটি কেমন গণতন্ত্র? কারণ গণতন্ত্রের মানেই তো হচ্ছে, বিভিন্ন মতামত থাকবে। আমরা অনেক ব্যাপারেই একমত হব হয়তো। সকল ব্যাপারে একমত হবো না, কিছু ব্যাপারে হয়তো দ্বিমত থাকতেই পারে। এটাই তো গণতন্ত্র, এটাই তো এসেন্স অব গণতন্ত্র।
আমরা তো কোনো হাইড অ্যান্ড সিক করছি না। আমি যেটা মনে করছি যে ভাই, আমি মনে করছি যেটা আমার দৃষ্টিতে ঠিক না, আমি বলছি ঠিক না।
বিবিসি বাংলা: কিন্তু দুই বছর আগে ২০২৩ সালে আপনারা ৩১ দফা দিয়েছেন। সেই ৩১ দফাতেই আপনারা সংস্কারের যেসব বিষয় এনেছেন, সেখানে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনার কথা বলেছেন। তাহলে এ বিষয়গুলোতে আপত্তি কেন?
তারেক রহমান: না, আমরা যেটাতে বলেছিলাম, আমরা সেখানে এখনো আছি। যতটুকু ভারসাম্য হওয়া উচিত, যে যে বিষয়ে যতটুকু বিবেচনা করা উচিত, আমরা সে বিষয়ের মধ্যে এখনো কমবেশি আছি। আমাদের অবস্থান থেকে তো আমরা অবস্থান পরিবর্তন করিনি।
বিবিসি বাংলা: কিন্তু মূল যে বিষয়গুলো, যেমন যেটা বড় বিরোধ হিসেবে আসছে, বড় মতপার্থক্য হিসেবে আসছে যে, এক ব্যক্তির তিন পদে একসাথে থাকা, সেখানেই তো আপত্তিটা থাকছে বিএনপির।
তারেক রহমান: না, আমরা তো তখনো বলিনি যে এক ব্যক্তি তিন পদে থাকতে পারবে না। এটা অন্যরা কেউ বলেছে যে, এক ব্যক্তি তিন পদে থাকতে পারবে না। আমরা মনে করি না যে, এটাতে স্বৈরাচারী হওয়ার কোনো কারণ আছে।
আমরা তো দেখেছি, স্বৈরাচারের সময়ও এবং তার আগে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তাদের টু থার্ড মেজরিটি ছিল। টু থার্ড মেজরিটি ২০০৮ সালে তারা নিয়েছিল। তারা ওটাকে চেঞ্জ করে ফেলেছে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা রাখেনি।
২০০১ সালে তো বিএনপিরও টু থার্ড মেজরিটি ছিল, বিএনপি তো চেঞ্জ করেনি। যেহেতু জনগণ মনে করে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে; বিএনপি টু থার্ড মেজরিটি থাকার পরেও তো চেঞ্জ করেনি।
কাজেই এক ব্যক্তির হাতে থাকলেই যে স্বৈরাচর হবে তা নয়। এটি নির্ভর করে ব্যক্তি টু ব্যক্তি, শুধু আইন চেঞ্জ করলেই সবকিছু সঠিক হয়ে যাবে না।
৩১ দফা, নাকি জুলাই সনদ, অগ্রাধিকার কী হবে
বিবিসি বাংলা: এই সংস্কারের বিষয়গুলোতে যেখানে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে একটা জুলাই সনদ প্রণয়নের কথা। সেটাও বাস্তবায়নের উপায়গুলো নিয়ে বা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটা বিতর্ক আছে। অনেক দল বলছে যে, নির্বাচনের আগেই আইনি ভিত্তি দেওয়া বা বাস্তবায়ন করা। আর বিএনপি বলছে, নির্বাচিত সংসদ সেটা করবে। এই জায়গাটা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী, বিএনপির চিন্তাটা এখন কী?
তারেক রহমান: দেখুন, এখানে আবার আমাকে বলতে হচ্ছে, আমরা কিন্তু কোনো হাইড এন্ড সিক করছি না। যদি আমাদের সেরকম অসৎ উদ্দেশ্য থাকত মনের ভিতরে, বলতাম আরেকটা যে ঠিক আছে, ওকে, অসুবিধা নাই। তার পরে ইনশআল্লাহ আমরা সরকার গঠনে সক্ষম হলে আমরা হয়তো করতাম না। তো আমরা যেটা মনে করছি, সেটাই বলছি।
এখন বিষয় হচ্ছে দেখুন, এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ইম্পর্টেন্ট একটি বিষয়। দেখুন, আমরা যদি ইভেন রিসেন্ট যে ঘটনা, নেপালেও যদি দেখি, আপনি দেখেন, ওরা কিন্তু এত কিছুর মধ্যে যাচ্ছে না। ওরা বলছে যে, গুরুত্বপূর্ণ যা বিষয় আছে, সংস্কার বলেন বা বিভিন্ন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যা বিষয় আছে—নির্বাচিত প্রতিনিধি যাঁরা আসবেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি যাঁরা আসবেন, তাঁরা সেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তার পরেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবকিছু বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলো বসেছে, অন্তর্বর্তী সরকার আহ্বান করেছে। এখানে যতটুকু হয়েছে, আমরা বলেছি, এখন যতটুকু হয়েছে, যেগুলো শুধু আইন দিয়ে করলে হয়ে যায়, সেগুলো হয়ে যাক। যেগুলোর সাংবিধানিক এনডোর্সমেন্ট লাগবে, সেগুলো আমরা মনে করি যে, নির্বাচিত সংসদ হওয়ার পরে সেখানে গ্রহণ করাটাই ভালো হবে।
কারণ, আপনি যদি নির্বাচিত সংসদের কথা বলেন, অথচ তাকে বাদ দিয়ে যদি আপনি আউট অব দ্য বক্স কিছু করেন এবং এটা যদি রেওয়াজ হয়ে যায়, তাহলে এটা আমরা মনে করি যে, এটা সাংবিধানিকভাবে হোক, আইনগতভাবে হোক বা যে দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিবেচনা করেন না কেন, ভবিষ্যতের জন্য এটা একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
সে জন্য আমরা মনে করি, যেটা দেশের জন্য সামগ্রিকভাবে ক্ষতির একটি কারণ হবে। সে জন্যই আমরা এটার সাথে একমত না।
বিবিসি বাংলা: এখন বিএনপির যেহেতু ৩১ দফা আছে, যদিও যেসব বিষয় আলোচনায় এসেছে, অনেক বিষয়ে মিল আছে। তো বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে বা সরকার গঠন করে, তখন ৩১ দফা নাকি জুলাই সনদ—কোনটা অগ্রাধিকার পাবে?
তারেক রহমান: আমরা যেগুলোতে একমত হয়েছি, প্রথমে আমরা সেগুলোর ওপরেই জোর দিব। সেটা আপনি যে নামেই বলেন না কেন, স্বাভাবিকভাবে আমরা ঐকমত্য কমিশনে যেগুলোতে সকলে মিলে একমত হয়েছি, আমরা প্রথমে সেগুলোতে ইনশাআল্লাহ সরকার গঠনের সুযোগ পেলে প্রথমে সেগুলোতেই অবশ্যই জোর দিব।
আর, তারপরে আপনি যেটা ৩১ দফার কথা বললেন, অবশ্যই ৩১ দফা আমাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট জনগণের প্রতি। আমরা তো আমাদের ৩১ দফার মধ্যে যেগুলোর এটার সাথে মিলে গিয়েছে, সেগুলো তো আমরা করবই। এর বাইরে যেগুলো থাকবে ৩১ দফায় আছে, সেগুলোও বাস্তবায়ন করব।
কারণ ওটা তো আমাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট। এটাও যেমন পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট, ওটাও আমাদের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। এটা আমরা রাজনৈতিক দলগুলো মিলে একত্রিত হয়ে বলেছি। ওটাও আমরা অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়েই কিন্তু ৩১ দফা দিয়েছি।
‘বিড়ালটি আমার মেয়ের’
বিবিসি বাংলা: রাজনীতি থেকে একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। আপনাকে সম্প্রতি প্রাণী অধিকার রক্ষা নিয়ে বেশ সোচ্চার দেখা গেছে। এ-সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে আপনি যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের বাইরে আপনার পোষা বিড়ালের সঙ্গে আপনার নিয়মিত ছবি দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তো এটা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল কীভাবে?
তারেক রহমান: প্রথমত এখানে একটু ক্লিয়ার করে নেই, বিড়ালটি আমার মেয়ের। ও এখন অবশ্য সবারই হয়ে গিয়েছে। আমরা সবাই ওকে আদর করি।
বিষয়টি হচ্ছে, এরকম শুধু বিড়াল নয়, আমি এবং আমার ভাই যখন ছোট ছিলাম, আমাদের একটি ছোট কুকুরও ছিল। ইভেন, তখন আমাদের বাসায় আম্মা হাঁস-মুরগি পালতেন, ছাগলও ছিল আমাদের বাসায়। উনি ছাগলও কয়েকটি পালতেন।
তো স্বাভাবিকভাবেই আপনি যেই দৃষ্টিকোণ থেকেই বলেন, পোষা কুকুর-বিড়ালই বলেন, বাই দ্য ওয়ে কবুতরও ছিল আমাদের বাসায়। শুধু কবুতর না, আমাদের বাসায় একটি বিরাট বড় খাঁচা ছিল। সেই খাঁচার মধ্যে কিন্তু পাখি ছিল, বিভিন্ন রকমের এবং আবার আরেকটি খাঁচা ছিল, যেটার মধ্যে একটা ময়না ছিল।
ময়নাটা আমরা বরিশাল থেকে এনেছিলাম। ও আবার বরিশালি ভাষায় কথাও বলত। টুকটুক করে মাঝে মাঝে কিছু কিছু কথাও বলত। কাজেই বিষয়টি হঠাৎ করেই না। এই পশুপাখির প্রতি যে বিষয়টি, এটির সাথে আমি কমবেশি ছোটবেলা থেকে জড়িত আছি। হয়তো এটি এখন প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্নভাবে। বাট, এটির সাথে আমি বা আমার পরিবার, আমরা অনেক আগে থেকেই আছি।
কুকুর-বিড়াল ছিল, গরু-ছাগল ছিল, হাঁস-মুরগি ছিল, পাখি ছিল, ময়না ছিল, কবুতর ছিল। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যদি আমরা চিন্তা করি, আমাদের আল্লাহ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করেছেন। আমাদের দায়িত্ব কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টি যা কিছু আছে প্রকৃতির, তার প্রতি কিন্তু যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এটি একটি বিষয়।
আর আমরা যদি মানবিক দৃষ্টিকোণ অথবা আমরা যদি নেচার থেকেও বিষয়টি দেখি, দেখুন, ওরা না থাকলে কিন্তু আমাদের জন্য বেঁচে থাকা কষ্টকর। প্রকৃতি যদি না থাকে, প্রকৃতির ব্যালেন্স যদি না থাকে।
এই আলোচনা শুরু হওয়ার আগে কিন্তু আপনি আমরা তিনজন কিন্তু ওয়েদার নিয়ে কথা বলছিলাম, এই ইংল্যান্ডের বা ইউকের ওয়েদার নিয়ে আমরা আলাপ করছিলাম এবং আমি বলছিলাম যে, আমার এই ১৭ বছর অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ওয়েদার মনে হয় একটু একটু এখানেও চেঞ্জ হয়েছে। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে পত্রপত্রিকায় দেখেছি পলিউশন ঢাকা শহরে। নরমালি আমরা জানি যে, একটি দেশের টোটাল অংশের মধ্যে এটলিস্ট ২৫ শতাংশ গ্রীন দরকার, বনায়ন দরকার। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আমি যতটুকু জেনেছি, এটি ১২ পার্সেন্টের মতো। হুইচ ইস ভেরি ডেঞ্জারাস।
তো এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি—কীভাবে আমরা বাড়াব। তো যেমন এগুলো আছে, ঠিক একই সাথে এই যে আপনি পশুপাখির কথা বললেন, এ বিষয়গুলো আছে নেচার। নেচারকে যদি আমরা মিনিমাম ঠিক রাখতে না পারি, সেখানে মানুষ হিসেবে কিন্তু আমাদের বসবাস করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। কাজেই আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এ বিষয়গুলো বোধহয় করা প্রয়োজন।
সামাজিক মাধ্যমে মিম, কার্টুন কীভাবে দেখেন
বিবিসি বাংলা: রাজনীতিতে যেমন আপনাকে নিয়ে অনেক আলোচনা আছে, স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক মাধ্যমেও আপনাকে নিয়ে অনেক আলোচনা আছে এবং আপনি যে পোস্টগুলো করেন, সেটা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। আপনাকে নিয়ে অনেক মিমও তৈরি হয়, অনেক কার্টুন হয়। যেমন—একটা মিমের কথা যদি আমি বলি, অনেকে শেয়ার করেছিল যে, আপনি আপনার সাথে আমরা জুমে কথা বলছি, আপনি জুমে বক্তব্য দেন। এটা নিয়ে একটা মিম তৈরি হয়েছে যে, ওয়ার্ক ফ্রম হোম, তো এ ধরনের মিমগুলো আপনি কীভাবে দেখেন?
তারেক রহমান: আমি এনজয় করি বেশ, বেশ আমি এনজয় করি।
বিবিসি বাংলা: আপনি দেখেন এগুলো? আপনার চোখে পড়ে?
তারেক রহমান: হ্যাঁ, চোখে পড়বে না কেন, অবশ্যই চোখে পড়ে। তবে এখানে একটি কথা আছে, যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়টি এল, আমার মনে হয় এ বিষয়ে একটু এড করা উচিত।
দেখুন, সোশ্যাল মিডিয়া এমন একটি বিষয়, আমি নিজেও আছি সোশ্যাল মিডিয়ায় কমবেশি। বহু বহু মানুষ আছেন, লক্ষকোটি মানুষ আছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এটি দিয়ে যেমন খুব দ্রুত একজনের সাথে আরেকজনের যোগাযোগ করা যায়।
আমরা মাঝে মাঝে বলি যে, দেখেন, অনেক সময় অনেক আলোচনায় আসে, সেমিনার-বক্তব্যে আসে যে, ডিনামাইটটা যখন আবিষ্কৃত হয়, ডিনামাইটটা আবিষ্কৃত হয়েছিল আপনার পাহাড় ভেঙে কীভাবে মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাট তৈরি করা যায়; হয়তো কীভাবে চাষের জমি করা যায়। এরকম লক্ষ্য সামনে রেখেই, উদ্দেশ্য সামনে রেখেই কমবেশি ডিনামাইটের ব্যবহারটা শুরু হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা দেখেছি, এটি মানুষ হত্যার মতো জঘন্য কাজেও ব্যবহার করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই যে, অবশ্যই প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে। যেহেতু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। মানুষের বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাস করি। প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে তার মতামত প্রকাশ করার।
তবে আমরা যদি সকলে এতটুকু সচেতন হই যে, আমি আমার মত প্রকাশ করলাম, কিন্তু এই মত প্রকাশের ফলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলো কি না—এ বিষয়টিকে যদি আমরা বিবেচনায় রাখি, একটি মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হলো কি না, ক্ষতিগ্রস্ত হলো কি না—এসব বিষয় বোধহয় আমাদের বিবেচনায় রাখা উচিত; এটি এক নম্বর।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ার বহুল ব্যবহারের ফলে ডিসইনফরমেশন বা মিসইনফরমেশন বিষয়টিও চলে এসেছে সামনে। এ কথাও চলে এসেছে। একটি জিনিস আমি দেখলাম বা শুনলাম, সাথে সাথেই আমি সেটিতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। তা না করে আমার মনে হয়, ফ্যাক্ট চেক বলে যেই কথাটি আছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, এটা সব জায়গায় আছে—এ ব্যাপারেও যদি আমরা একটু অ্যালার্ট থাকি সবাই, এ ব্যাপারে যদি একটু সচেতন থাকি যে ঠিক আছে, এটি একটু যাচাইবাছাই করে নিই।
যদি সত্য হয়, অবশ্যই আমার সেখানে মতামত থাকবে। কিন্তু যদি মিথ্যা হয় বিষয়টি, কেন আমি এখানে মতামত দিব? একটি মিথ্যার সাথে আমি কেন নিজেকে সংশ্লিষ্ট করব? একটি খারাপ কিছুর সাথে কেন আমি নিজেকে সংশ্লিষ্ট করব? এটি আমি আমার মতামতটা প্রকাশ করলাম।
মানুষের আস্থার প্রশ্নে যা বললেন
বিবিসি বাংলা: আমরা প্রায় শেষ দিকে চলে এসেছি। আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই যে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তন যেটা হয়েছে গত বছরের ৫ আগস্ট। তারপর থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য বা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হবে—এই প্রশ্নে মানুষকে কীভাবে আস্থায় নেবেন?
তারেক রহমান: এই প্রশ্নের উত্তরে যদি একটু এভাবে বলি, স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক দল হিসেবে তো আমাদের একটি পরিকল্পনা আছে। আপনাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে আমি কিছু কিছু বলেছি।
ব্যাপারটা হচ্ছে এরকম যে, দেখুন এই মুহূর্তে মাঠে আমরা যেই রাজনৈতিক দলগুলো আছি, আমরা ধরে নিতে পারি, সেই রাজনৈতিক দলগুলো ইনশআল্লাহ আগামীতে দেশ পরিচালনা করতে পারে। তার মধ্যে বিএনপিরই কিন্তু দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে।
আপনাকে যদি বলি, ধরেন এখন লন্ডন আসবেন। তো আপনি একটা প্লেনে উঠলেন। যে প্লেন চালাবে, সে যদি আপনাকে বলে যে ভাই কিছু মনে করেন না, আমার ঠিক লাইসেন্সটা হয়নি এখনো, তবে আমার মনে হয় আমি চেষ্টা করলে আপনাকে নিয়ে যেতে পারব লন্ডন পর্যন্ত উড়িয়ে। আপনি কি তার সাথে উঠবেন প্লেনে? নিশ্চয়ই আপনি উঠবেন না।
আপনি একজন অভিজ্ঞ ড্রাইভারের সাথে উঠতে পারেন। কিন্তু অভিজ্ঞ ড্রাইভারও গাড়ি হয়তো ঠিকই চালাচ্ছে সেফলি, কিন্তু রাস্তায় তো গর্ত খানাখন্দ থাকবেই, একটু জার্কিং হতেই পারে। জোরে অনেক সময় ব্রেক হতেই পারে, ঝাঁকুনি লাগতেই পারে, কিন্তু অভিজ্ঞ ড্রাইভার আপনাকে মোটামুটি ঠিকভাবে নিয়ে যাবে। নিয়ে যাওয়ার সর্বোচ্চ সে চেষ্টা করবে। কারণ তার সেই অভিজ্ঞতা আছে।
কাজেই আমরা যদি দেখি যে, ভালো কাজ বা কমিটমেন্ট আপনি যেটা বলেন, বিএনপি করবে কি না। আমরা তো করেছি। হতে পারে আমাদের দ্বারা কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছে।
আপনি একটু আগে একটা কথা বলেছিলেন, মানুষ তো অতীত থেকেই শিখে। ইয়েস, আমরাও দেখেছি, আমরাও অতীত থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যে ঠিক আছে এই কাজটি এভাবে করলে হয়তো ভুল হয়, এটি আমরা ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ করব না। বাট আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা ভালো-মন্দ যাচাই করতে পারব।
একই সাথে আমাদের কমিটমেন্ট আছে, যে কমিটমেন্ট দিয়ে আমরা ডেলিভারি করতে পারব এবং আমরা ডেলিভারি করতে চাই।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান
বিবিসি বাংলা: শেষ প্রশ্নটি করি তাহলে আপনাকে এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই। বিগত সরকারের আমলে তাদের একটা বিষয় বড় সমালোচনা ছিল যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। আপনারা যদি ক্ষমতায় আসেন, সে ক্ষেত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদ বা সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়নের বিষয়গুলো যে আর হবে না, সেই নিশ্চয়তা কি আপনি দিতে পারেন?
তারেক রহমান: জ্ব, ইয়েস পারি। একদম দিতে পারি। আপনি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত পত্রপত্রিকা খুলুন। আমি কারও নাম উল্লেখ করব না, কোনো পত্রিকার কথা উল্লেখ করব না। শুধু খুলে দেখুন কীভাবে অনেক খবর ছাপা হয়েছিল, যার সত্যতা কিন্তু ছিল না, অপপ্রচার ছিল। কিন্তু অপপ্রচারটা সংবাদ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আপনি কি শুনেছেন, আপনি কি আমাকে প্রমাণ দিতে পারবেন, বলতে পারবেন যে বিএনপির সময়, আমি কিন্তু বলতে পারব অনেক অনেক সাংবাদিকের নাম, যাঁরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন স্বৈরাচারের সময় এবং পরবর্তীতে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ইভেন, এখনো অনেকে প্রবাসজীবনে আছেন, এরকম বহু সাংবাদিক।
আমি বলতে পারব, স্বৈরাচারের সময় বহু সাংবাদিককে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন করে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ধমক দেওয়া হতো। বিএনপির সময় এগুলো করা হয়নি, কারণ তখন সংবাদপত্রে যে খবরগুলো প্রকাশিত হয়েছে তৎকালীন বিএনপি সরকার সম্পর্কে, আমার সম্পর্কে যে খবরগুলো প্রকাশিত হয়েছে, যদি ওই রকম হতো, তাহলে কিন্তু ওরকম খবর প্রকাশিত হতো না।
অর্থাৎ, বিএনপির সময় যদি অত্যাচার-নির্যাতন থাকত, তাহলে খবরগুলো প্রকাশিত হতো না স্বাভাবিকভাবে, যা হয়নি বিগত সরকারের সময় স্বৈরাচার সরকারের সময়। কাজেই আপনাকে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, বিএনপির অতীত সরকারের সময় যেরকম সাংবাদিকদের গুম করা হয়নি। সাংবাদিকদের নির্যাতন করা হয়নি। সাংবাদিকদের দেশ ছেড়ে যেতে হয়নি, বাধ্য হতে হয়নি। ইনশআল্লাহ ভবিষ্যতেও হবে না।
বিবিসি বাংলা: তাহলে কি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করে—এ ধরনের যে আইনগুলো রয়েছে, সেগুলো আপনারা বাতিল করবেন, এটা কি ধরে নেওয়া যায়?
তারেক রহমান: অবশ্যই, আমরা সকলে মিলে বসব, আলোচনা করব। আপনাদের মতো সাংবাদিকসহ যাঁরা আছেন, তাঁদের সাথে আলোচনা করব। আলোচনা করে সেগুলো এরকম কালো আইন যা যা আছে, আমরা আস্তে আস্তে ঠিক করব।
তবে এখানে বোধহয় একটি বিষয় আবার আমাকে উল্লেখ করতে হয়, যেটি আমি সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে বলেছি। দেখুন, এটি তো সবাইকে মিলে করতে হবে। অপপ্রচারকে তো অবশ্যই সংবাদ হিসেবে তো প্রচার করা ঠিক নয়, তাই না?
আমাদের কাছে আপনাদের যেরকম চাওয়া থাকবে, ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে, যারাই আসুক সরকারে, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমাদেরও অনুরোধ থাকবে আপনাদের প্রতি যে অপপ্রচার সংবাদ হিসেবে যেন প্রচারিত না হয়—এ বিষয়টি একটু সকলকে সচেতন বা খেয়াল রাখতে হবে।
বিবিসি বাংলা: তারেক রহমান, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলার জন্য।
তারেক রহমান: আপনাদেরও অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমার কথাগুলো দেশের মানুষের সামনে আমি তুলে ধরতে পেরেছি। সেই সুযোগটুকু আপনারা করে দিয়েছেন, তার জন্য আপনাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।