খন্দক যুদ্ধে অলৌকিক আহার: এক হাজার সাহাবিকে খাওয়ালেন রাসুল (স.) - জনবার্তা
ঢাকা, সোমবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খন্দক যুদ্ধে অলৌকিক আহার: এক হাজার সাহাবিকে খাওয়ালেন রাসুল (স.)

জনবার্তা প্রতিবেদন
অক্টোবর ১, ২০২৫ ২:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইসলামি ইতিহাসে খন্দকের যুদ্ধের প্রাক্কালে সংঘটিত এক বিস্ময়কর ঘটনা আজও ঈমানদারদের অন্তরে গভীর প্রভাব ফেলে। সীমিত খাবার থেকে নবীজি (স.)-এর দোয়ায় এক হাজার সাহাবি তৃপ্তিসহ আহার করেন। তবুও খাবার অবিকৃত অবস্থায় রয়ে যায়। এটি ছিল নবীজি (স.)-এর এক সুস্পষ্ট মোজেজা।

খন্দক খননের সময় নবীর অংশগ্রহণ ও মোজেজা
খন্দক খননের সময় সাহাবিরা একটি অতি শক্ত পাথরে আটকে যান। বিষয়টি নবীজি (স.)-কে জানানো হলে তিনি নিজেই খন্দকে নামেন। তীব্র ক্ষুধায় কাতর নবীজি (স.) তখন পেটে একটি পাথর বেঁধে রেখেছিলেন। হাতে কোদাল নিয়ে তিনি পাথরটিতে আঘাত করলে তা মুহূর্তেই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বালুকণায় পরিণত হয়। এটি ছিল তাঁর আল্লাহপ্রদত্ত একটি অলৌকিক নিদর্শন।

জাবের (রা.)-এর আতিথেয়তা
সাহাবি জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) নবীজি (স.)-এর ক্ষুধার্ত অবস্থা দেখে বাড়ি ফিরে স্ত্রীর কাছে সামান্য মজুদ খাবারের কথা জানতে চান। তাঁর স্ত্রী মাত্র এক ‘সা’ যব ও একটি ছোট বকরির ছানা বের করেন। জাবের (রা.) ছানাটি জবেহ করেন এবং তাঁর স্ত্রী যব পিষে রুটি বানানোর প্রস্তুতি নেন।

প্রথমে তিনি নীরবে নবীজি (স.)-কে কয়েকজন সাহাবিসহ দাওয়াত দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নবীজি (স.) উচ্চৈঃস্বরে সমবেত সকল খন্দক খননকারী সাহাবিকে ডেকে বলেন- ‘হে পরিখা খননকারীরা! তোমরা সবাই চলো, জাবের তোমাদের জন্য খাবার প্রস্তুত করেছে।’

খাবারের অলৌকিক বৃদ্ধি
জাবের (রা.)-এর বাড়িতে এসে নবীজি (স.) খাবারের হাঁড়ি ও আটা খামিরের জন্য বরকতের দোয়া করেন। এরপর তিনি নির্দেশ দেন- ‘তুমি চুলা থেকে হাঁড়ি না নামিয়েই পরিবেশন করতে থাকো এবং নারীদের ডাকো, তারা রুটি বানাতে সাহায্য করবে।’

জাবের (রা.) শপথ করে বলেন- ‘সাহাবির সংখ্যা ছিল এক হাজার। আল্লাহর কসম! তারা সবাই তৃপ্তির সঙ্গে আহার করে চলে গেল। অথচ আমাদের হাঁড়ি তখনও পূর্ণ অবস্থায় ছিল এবং আটার খামিরও আগের মতোই রয়ে গিয়েছিল।’

ইতিহাসের সাক্ষ্য
এই অলৌকিক ঘটনাটি ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম তাঁদের বিশুদ্ধ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। ইসলামি ইতিহাসে এটি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর এক সুস্পষ্ট মোজেজা হিসেবে চিরভাস্বর হয়ে রয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, আল্লাহর অশেষ কৃপায় তাঁর প্রেরিত নবী (স.)-এর দোয়ায় সামান্য বস্তু থেকেও অসীম বরকত লাভ করা সম্ভব।
(সূত্র: বুখরি: ৪১০১; মুসলিম: ৫২১০)